close(x)
 

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিট কথা বলতে পারলেই সমস্যা সমাধান হতো : শিক্ষকরা

by Education বাংলাদেশ Published: July 22, 2023

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেছেন, ‘শিক্ষকদের ন্যায়সংগত দাবি আদায়ে জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছি। শিক্ষামন্ত্রী নয়, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে জাতীয়করণের ঘোষণা শুনতে চাই। আমাদের ধারণা আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিট কথা বলতে পারলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।’

আজ শনিবার সকাল থেকে ১২তম দিনের মতো চলছে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে আন্দোলন।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেন, ‘আমরা আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। শেষ পর্যন্ত যদি আমাদের হতাশ করা হয় তাহলে আমরণ অনশনে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।’

তিনি আরো বলেন, চাকরিতে যোগদান থেকে শুরু করে অবসরজীবন পর্যন্ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা।

একজন এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষক চাকরির শুরুতে ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পান। কিন্তু সরকারি স্কুলে দেওয়া হয় ১৬ হাজার। তারা মূল বেতনের শতভাগ উৎসব ভাতা (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায়) বা বোনাস পেলেও বেসরকারিতে দেওয়া হয় মাত্র ২৫ শতাংশ। অথচ বর্তমানে বাংলাদেশে সব চাকরিজীবী, এমনকি এনজিও কর্মীদেরও শতভাগ উৎসব ভাতা দেওয়া হয়।

চিকিৎসা ভাতা এক মাসে ৫০০ টাকা পান তারা। যেখানে একজন ডাক্তারের ভিজিট সর্বনিম্ন ৬০০, ৮০০ বা ১০০০ টাকা, সেখানে একটি পরিবারকে ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারি শিক্ষকদের দেওয়া হয় দেড় হাজার। আবার বাড়িভাড়া বাবদ এক মাসে এক হাজার টাকা পান। কিন্তু সরকারি শিক্ষকদের মূল বেতনের ৪৫-৫০ শতাংশ দেওয়া হয়।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, ‘গত ১১ জুলাই থেকে আমাদের এই কর্মসূচি চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানোর কর্মসূচি চলছে ১৬ জুলাই থেকে। আন্দোলনের সপ্তম ও নবম দিনে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আলোচনার ডাক পেয়েছি। ১৭ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং ১৯ জুলাই শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু এসব বৈঠক থেকে দাবিপূরণে কার্যকর কোনো আশ্বাস পাইনি। তাই আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাই। আমরা মনে করি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিট কথা বললেই আমাদের দাবি আদায় হয়ে যাবে।’

সমাবেশে শিক্ষক নেতারা বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আরো অনেক ধরনের বৈষম্যের মধ্যে আছেন। তাদের কোনো বদলি নেই। অনেকে পরিবার এবং বাবা-মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বহুদূরে চাকরি করছেন বছরের পর বছর। কিন্তু বদলি হয়ে নিজ এলাকায় যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এককালীন অবসর ভাতা দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কাছ থেকে চাকরিজীবনে অবসর খাতে ৬ শতাংশ ও কল্যাণ খাতে ৪ শতাংশ মিলিয়ে মোট ১০ শতাংশ বেতন থেকে কেটে রাখা হয়। অথচ অবসরে গেলে এককালীন কিছু টাকা পেতে চার-পাঁচ বছর লেগে যায়।

সমাবেশে শিক্ষক নেতারা আরো বলেন, এসব সমস্যা সমাধানের জন্য ডিসিদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় আন্দোলন করা হয়েছে। কিন্তু সরকার বা ঊর্ধ্বতন কোনো কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের এসব কষ্ট বা দুর্দশার কথা আমলে নেয়নি। তাই এখন লাখ লাখ শিক্ষক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে প্রেস ক্লাবে জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান করছেন।