কক্সবাজারের টেকনাফে মাদ্রাসা পড়ুয়া এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে অপহরণ নাটক সাজানো হয়েছিল বলে র্যাব জানায়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মাদ্রাসাছাত্র এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র্যাব ১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক।
১৭ বছর বয়সি গ্রেপ্তার কিশোর ওই মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র। ৯ বছর বয়সি নিহত শিশুটি একই মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো।
গ্রেপ্তার কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মেজর সাদিকুল জানান,
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশ থেকে মাদ্রাসা পড়ুয়া ওই শিশুটি নিখোঁজ হয়। পরে রাতে শিশুর মাকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। স্বজনরা রাতেই বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানান।
ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়।
বিষয়টি র্যাবের নজরে এলে রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে তারা।
ঘটনায় জড়িত একজন শুক্রবার বিকালে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় অবস্থান করছে বলে জানাতে পেরে র্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।
পরে মাদ্রাসাটির উপাধ্যক্ষের কক্ষ থেকে ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার কিশোরের দেওয়া তথ্যে মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি পাহাড়ি নর্দমা থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার কিশোরের কাছে থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে সাদিকুল বলেন, ওইদিন শিশুটি বাড়ির পাশে দোকানে যায়। এ সময় খাবারের লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে কৌশলে মাদ্রাসায় নিয়ে যায় ওই কিশোর। এরপর শিশুটির হাত-পা বেঁধে তাকে ধর্ষণ করে।
কিশোরটিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, ধর্ষণে শিশুটির রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার ভয়ে নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধে শিশুটিকে হত্যা করে গভীর রাতে মাদ্রাসার পাশের পাহাড়ের ঝোপ জঙ্গলপূর্ণ নর্দমায় ফেলে দেয় ওই কিশোর।
র্যাব কর্মকর্তা সৈয়দ সাদিকুল হক আরও জানান, রাতে ‘অপহরণ নাটক সাজায়ে’ ওই কিশোর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে শিশুটির মায়ের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
গ্রেপ্তার কিশোরকে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান মেজর সাদিকুল হক।