close(x)
 

হেফাজতের কমিটিতে ফিরছেন পুরনোরা

by বাংলাদেশ Published: August 5, 2023 ২০২১ সালের ৭ জুন ঢাকার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম খিলগাঁও এ সংবাদ সম্মেলন করে বর্তমান কমিটি ঘোষণা করেন হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী। মামুনুল হকসহ আরো কয়েকজনকে রাখা হয়নি।

দুই বছর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরকে কেন্দ্র করে সংঘাতের পর হেফাজতে ইসলামের যে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল তার সব সদস্যকে বর্তমান কমিটিতে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি।

শনিবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ের একটি মাদ্রাসায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

হেফাজতের দপ্তর সম্পাদক মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিন বেলা ১১টায় খিলগাঁও মাখজানুল উলূম মাদরাসায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আমির শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

আগের কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন হেফাজতের কারাবন্দী নেতা মামুনুল হক। ওই কমিটি বিলুপ্তির পর নতুন কমিটিতে তাকেসহ কয়েকজনকে বাদ দেওয়া হয়। নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে তারা আবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বহাল হবেন।

শনিবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর হাটহাজারী মাদরাসায় কাউন্সিলের মাধ্যমে হেফাজতের যে কমিটি গঠিত হয়েছিল তা পরবর্তীতে (২৫ এপ্রিল, ২০২১) বিলুপ্ত করা হয়।

“ওই কমিটির সকল সদস্যকে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তর্ভূক্ত করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। পাশাপাশি যথাযথ পদ বিন্যাসের জন্য সংগঠনের মহাসচিবকে আহ্বায়ক করে ১২ সদস্যের একটি সাবকমিটিও গঠন করা হয়েছে।”

হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক শাহ্ মুহাম্মদ ইয়াহইয়ার মৃত্যুর পর তাঁর পদ শূন্য হওয়ায় হাটহাজারী মাদরাসার বর্তমান মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী এবং আতাউল্লাহ হাফেজ্জীকে সিনিয়র নায়েবে আমিরের পদে মনোনীত করার সিদ্ধান্তও হয় সভায়।

কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির ছিলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী। তিনি ২০২০ সালে মারা যাওয়ার পর নানা আলোচনার মধ্যে ওই বছরের ১৫ নভেম্বর সম্মেলনে জুনাইদ বাবুনগরীকে আমির করে হেফাজতের ১৫১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছিল।

২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতা করে হেফাজত বিক্ষোভ ও হরতাল ডাকে। এসময় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামে সহিংসতায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়। সংঘাতের অর্ধশত মামলার পর মামুনুলসহ হেফাজতের ডজন খানেক কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের অনেকেই এখনো কারাবন্দী।

সংঘাতময় পরিস্থিতিতে পুলিশের অভিযানে চাপের মধ্যে ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন সংগঠনটির তৎকালীন আমির জুনাইদ বাবুনগরী।

এর দুই মাসের মাথায় ৭ জুন ঢাকার খিলগাঁওয়ের মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে হেফাজতের ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনটির মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী।

সেদিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিহাদী বলেন, আগের কমিটির যারা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন, তাদের নাম এই ৩৩ সদস্যের ঘোষিত কমিটিতে নেই।

“ছোট পরিসরে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটি পরবর্তীতে চিন্তা-ভাবনা করে দেখবে আর কে কে এই কমিটিতে যুক্ত হবেন। যারা কারাগারে আছেন তারা এখানে অন্তর্ভুক্ত হবেন কিনা, তা পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে,” বলেছিলেন তিনি।

রেজাউল হত্যার বিচার, কারাবন্দী নেতাদের মুক্তি দাবি

শনিবার হেফাজতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় গত ২৮ জুলাই বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শেষে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ছুরিকাঘাতে নিহত হাফেজ রেজাউল করিম হত্যার বিচার দাবি করে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

সরকারের আশ্বাসের পরও মামুনুল হকসহ কারাবন্দী সবার মুক্তি এবং হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার না হওয়ায় সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন নেতারা।

অবিলম্বে সবার মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।