বিদেশিদের সমর্থনের ওপর বাংলাদেশের রাজনীতি নির্ভর করে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার (১৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউরি সংলগ্ন নুর আহমদ সড়কে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের ‘মেহনতী শ্রমিক জনতার মহাসমাবেশে’ প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খসরু বলেন, বিদেশিদের সমর্থনের ওপর বাংলাদেশের রাজনীতি নির্ভর করে না, তবে বিদেশিদের সমর্থনে সাধারণ মানুষ খুশি হয়। এটার মূল দায়িত্ব হবে আমাদের তৈরি হতে হবে। জিয়াউর রহমান দেশে বাকশালী একদলীয় শাসনব্যবস্থা বন্ধ করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন। আর বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তণ করেছিলেন।
বিদেশিরাও একটি অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বিদেশি মন্ত্রীরা এখানে আসছেন। তারা বলছেন, তারা বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চান। বাংলাদেশের মানবাধিকার দেখতে চান, বাংলাদেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দেখতে চান। কোনো একটি দেশের মন্ত্রী এসে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে, প্রধানমন্ত্রীর অফিসে যখন সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা তখন বলে, তাতে আত্মহত্যা করা দরকার।
তিনি বলেন, তারা (বিদেশিরা) বলছেন, বিগত দিনে গুম, খুন হয়েছে, এগুলো বিচার হতে হবে। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার চাচ্ছে। কে এসব নির্দেশ দিয়েছে? এসব প্রশ্ন তখন আসবে। তারা শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকের ন্যায্য দাবি আদায়ের কথা বলে গেছেন। কারণ এ দেশে শ্রমিকের ন্যায়বিচার নেই। অর্থাৎ শ্রমিকের প্রতি যে দায়িত্ব, সেটা সরকার পালন করছে না। এখানে শ্রম আইন, শ্রমিকের মনমতো না হলে দেশে আরও কিছু আসতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এরই মধ্যে বিএনপি এক দফা দিয়েছে। বিএনপির এক দফা মানে শেখ হাসিনা বিদায় হও। বিএনপি শুধু নয়, যুগপৎ আন্দোলনে যারা আছেন, তারা সবাই আজকে সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন। যুগপৎ আন্দোলনের বাইরে যারা রয়েছেন, তারাও রাস্তায় নেমেছেন। প্রতিনিয়ত নুতন নুতন সংগঠন রাস্তায় নামার অঙ্গীকার করছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ, দু-চারজন মানুষ ব্যতীত তাদের সঙ্গে কেউ নেই।
বিদেশিরা বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ প্রত্যেকটি রাজনীতিবিদদের গতিবিধি পরীক্ষা করা হচ্ছে। তারা কী বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে যাচ্ছে, নাকি হালুয়া রুটির পক্ষে যাচ্ছে। আমি আগেও বলেছিলাম গেম ওভার, খেলা শেষ। এবার হালুয়া রুটির সুযোগ নেই। বিশ্বের গণতান্ত্রিকদেশগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক তাদের ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচিত করবে তাদের সংসদ সদস্য। নির্বাচিত করবে তাদের সরকার। এর বাইরে কিছু হওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের ভেতরে-বাইরে একটাই সিদ্ধান্ত, বাংলাদেশের জনগণ নিরপেক্ষভাবে তাদের ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের সরকার নির্বাচিত করবে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে বাইরের কিছু কিছু দেশ বাংলাদেশে আসছে। এখন তাদের (সরকার) জিজ্ঞাসা করুন, এরা (বিদেশিরা) বাংলাদেশে কেন আসছেন? এরা কী ভারতে গেছে? এরা কী শ্রীলঙ্কা গেছেন? এরা কী ভুটানে, নেপালে, পাকিস্তানে গেছেন? তবে কেন বাংলাদেশে আসছেন? তারা ভোট চোরের আস্তানা ভেঙে দেওয়ার জন্য আসছেন। সবার চোখে পরিষ্কার হলেও কিছু কিছু আওয়ামী লীগ নেতা তাদের নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা করার জন্য মিথ্যাচার করছে।