মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো আন্দোলন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন তারা। এর আগে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) জাতীয় ঈদগাহ ময়দান থেকে প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, তাদের দাবি একটাই, জাতীয়করণ। একই সিলেবাস, একই পড়া কিন্তু সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় তাদের সুযোগ-সুবিধা অনেক কম। আমাদের চিকিৎসা ভাতা মাত্র ৫০০ টাকা। বাসাভাড়া এক হাজার টাকা। এটা লজ্জাজনক। অথচ আমাদের তুলনায় সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা সুযোগ-সুবিধা পান বহুগুণ বেশি।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের আলোচনা হতে পারে। তবে কখন এই আলোচনা হবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মাউশি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এই আলোচনার বিষয়ে। তবে আমরা শুধু আলোচনা করে শুধু আশ্বাস নয় আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জাতীয়করণের এক দফা ঘোষণা শুনতে চাই।
এর আগে জাতীয়করণের দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন শুরু করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। আজ চলছে আন্দোলনের অষ্টম দিন। এদিনেও কোনো সমাধান পায়নি আন্দোলনকারীরা। তবে শিক্ষকরা বলছেন— দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরিকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা। গত রবিবার থেকে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে প্রেসক্লাবে হাজিরা দেওয়া কর্মসূচী চালু করে শিক্ষকরা। কার্যত সারাদেশের এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অচল অবস্থা বিরাজমান। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার শিক্ষকদের সঙ্গে মাউশির কোনো ফলপ্রসু আলোচনা না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।
শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিতে এবার ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। যদিও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এই নির্দেশনায় আন্দোলনের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেনি মাউশি।
এই নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া বলেন, যত নির্দেশনাই আসুক, বাঁধা বিপত্তি আসুক না কেন আমরা জাতীয়করণের সূর্নিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। স্কুলের তালা খুলবে না।