রাজধানীতে গত দুই দিন ধরে শাহবাগে আন্দোলন করছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক আটকে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পাশাপাশি ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের কারণে রাজধানীর বনানী, চেয়ারম্যান বাড়ি, মহাখালী, ভাষানটেক, গুলশান এলাকায় যান চলাচল সীমিত রয়েছে। আর এসবের কারণে সোমবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
প্রধান সড়কের যানজটের প্রভাবে রাজধানীর প্রবেশমুখ বনানী, চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে যাত্রাবাড়ি পর্যন্ত যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। এতে দিনভর চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় রাজধানীবাসীকে।
সকালে জাতীয়করণের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন দেশের বিভিন্ন বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা। তারা কদম ফোয়ারা থেকে পুরানা পল্টন, দৈনিক বাংলা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত দুই পাশের সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।
এর প্রভাবে মগবাজার থেকে গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী এসব এলাকার সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানবাহনগুলো ওই পথ এড়িয়ে বিকল্প পথে চলাচল করছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার সড়ক উন্মুক্ত রাখার আহ্বান জানানো হলেও তা উপেক্ষা করেন শিক্ষকরা। এ সময় সড়ক দিয়ে যাতায়াতের চেষ্টা করলে সাধারণ পথচারীদের হেনস্তাও করা হয়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গত ১১ জুলাই থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)।
এদিকে মাসিক ভাতা ৫০ হাজার টাকা করার দাবিতে সোমবারও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন ট্রেইনি চিকিৎসকরা। রোববার আন্দোলনের পর তাদের আগের ভাতা ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়। তবে চিকিৎসকরা ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে বেলা ১১টার দিকে সড়কে অবস্থান নেন। পরে বিকাল ৩টা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
চিকিৎসকদের অবস্থানের কারণে সড়কে যান চলাচলে কিছু বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এতে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় যানজট দেখা দেয়।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা জানান, সাত দিনের মধ্যে আমরা প্রজ্ঞাপন নিয়ে ঘরে ফিরতে চাই। আমরা কোনও দয়া-দক্ষিণা চাই না। ৫০ হাজার টাকা ভাতা আমাদের অধিকার।
ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের কারণে রাজধানীর বনানী, চেয়ারম্যান বাড়ি, মহাখালী, ভাষানটেক, গুলশান এলাকাসহ ঢাকার প্রবেশমুখের প্রতিটি সড়কে চেকপোস্ট বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্যরা প্রতিটি গাড়ির গন্তব্য জানতে চাইছেন। যাদের বৈধ কার্ড, বৈধ স্টিকার রয়েছে সেসব গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। তবে মোটরসাইকেল ও সিএনজি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
গুলশান, বনানী ও মহাখালী এলাকায় ঢোকার মুখ বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে প্রধান সড়কে। রাজধানীতে ঢোকার মুখে এবং বের হয়ে যাওয়ার সময় দীর্ঘ গাড়ির জট দেখা গেছে।
বনানী এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক ট্রাফিক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিতের ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।
যানজটের বিষয়ে ভাসানটেক থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি সময় সংবাদকে জানান, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কোন গাড়ি চলবে কোন গাড়ি চলবে না এটা তারা দেখেন।