‘অনিয়ম’ এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতার’ অভিযোগ তুলে ভোট শুরুর এক ঘণ্টার মাথায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভূঞা।
এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন ‘সম্ভব নয়’ বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাক প্রতীকের এই প্রার্থী।
সোমবার সকাল ৮টায় এ আসনের ১২৪টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এরপর ৯টায় বনানী মডেল স্কুলে কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তারেকুল।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বিএনপি এবং সরকারবিরোধী দলের এতদিনের করা অভিযোগই সত্য প্রমাণ হল। আমি আমার ভোটের কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালাম। আমি নির্বাচন বর্জন করলাম।”
কেন্দ্রে ঢুকতে ‘বাধা’ দেওয়ারি অভিযোগ করে এই স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, “আমি একজন ছোট প্রার্থী। প্রশাসন আমার লোক ঢুকতে দিচ্ছে না। আমাকে যদি সবাই মিলে সহযোগিতা করত তাহলে একটা কথা ছিল।
“আমাকে ও আমার লোকজনকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনটি বাধা অতিক্রম করে আমি এখানে আসলাম। রাস্তার মাথায় আমাকে আবার বাধা দেওয়া হল। পরে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে দেখি সেখানে কোনো ভোটার নেই। কেন্দ্রে সরকারি দলীয় এজেন্ট ছাড়া আর কেউ নেই।”
পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া চলার মধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকেও সহযোগিতা মেলেনি বলেও তারেকুলের অভিযোগ।
তিনি বলেন, “আগে আমার মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বাতিল করেছে। হাই কোর্ট থেকে রায় নিয়ে এসে আমি এখন নির্বাচন করছি। নির্বাচনের মাঠে অংশগ্রহণের পর থেকে দেয়ালে পোস্টারিং করা, লেমিনেটিং পোস্টারসহ যতভাবে আচরণবিধি লংঘন হয়েছে সবগুলো নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেছি। তারা কোনো সিদ্ধান্ত দেননি, বলেন পরিস্থিতি এমনই হবে। যেন নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।“
তারেকুল বলেছেন, কড়াইল বস্তিসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তার নির্বাচনী এজেন্টদের ‘ভয়ভীতি’ দেখানো হচ্ছে এবং এজন্য তারা দায়িত্বপালনে অপারগতা প্রকাশ করছেন।
“তারা (এজেন্ট) বলছে, ‘আমাদের ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। আমরা কেন্দ্রে যেতে পারব না।’ এভাবে তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার এজেন্টদের থামিয়ে রেখেছে।”
চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হয় ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, গুলশান এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা ১৭ আসনটি। সোমবার সকাল ৮টায় এ আসনের ১২৪টি কেন্দ্রে ভোট শুরু হয়। সোয়া তিন লাখ ভোটারের এ আসনে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।
এ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোট আটজন। তারেকুল বাদে বাকিরা হলেন– আওয়ামী লীগের মোহম্মদ আলী আরাফাত (নৌকা), জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান (লাঙ্গল), জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান (গোলাপ ফুল), তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন (ডাব), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন (ছড়ি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল আলম হিরো আলম (একতারা)।