শিক্ষামন্ত্রীর বিভিন্ন বক্তব্যের কারণে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকদের উপস্থিতি বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের যোগ্যতা ও ক্যাডার-নন ক্যাডারসহ বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলার কারণে জাতীয়করণ দাবিতে শিক্ষকদের উপস্থিতি বেড়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষকদের আন্দোলনের পেছনে উসকানিদাতা আছে, এ কথা যথার্থই বলেছেন। কারণ তিনি (শিক্ষামন্ত্রী) নিজে আমাদের আন্দোলনে উসকানিদাতা হিসেবে কাজ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিটিএর আয়োজনে ১৫তম দিনের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এ কথা বলেন। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে সারা দেশ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে দলে দলে ঢাকায় আসছেন।
শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, ‘আন্দোলনে ধীরে ধীরে লোক কমতে থাকে। আমাদের কর্মসূচির ১৫তম দিনে তা বেড়ে গেছে।
অর্থাৎ শিক্ষকরা জাতীয়করণ ছাড়া বাড়ি ফিরবেন না। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে শিক্ষকদের অনুপস্থিতির তালিকাসহ শাস্তির ভয় দেখিয়ে এ আন্দোলন থামিয়ে রাখা যাবে না। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষক রাস্তা ছেড়ে বাড়ি ফিরবেন না।’
আন্দোলনত শিক্ষকরা জানান, এদিন বিটিএর কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সংগঠন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলনে উপস্থিত হয়েছেন।
তাদের উপস্থিতিতে নেতাকর্মীদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই সাত দিনের জন্য আন্দোলনে এসেছিলেন, তবে এ কর্মসূচি ১৫তম দিনে গড়িয়েছে। পালাক্রমে কিছু শিক্ষক ফিরে যাচ্ছেন, আবার অনেক শিক্ষক ঢাকামুখী হচ্ছেন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে রাখার কারণে সারা দেশেই শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আবার যেসব প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিগত কয়েক দিনের তুলনায় মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ নিয়ে বিভিন্ন গান, ছড়া, কবিতা ও বক্তৃতার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনত শিক্ষক-কর্মচারীরা। কদম ফোয়ারা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব হয়ে গুলিস্তান মোড় ও সচিবালয়ের একাংশ পর্যন্ত এসব শিক্ষক অবস্থান নেন। অনেক শিক্ষক প্রেস ক্লাবের অপর পাশে রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। শিক্ষকদের উপস্থিতির কারণে প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে। শিক্ষকদের দাবি, এদিন প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
আগামী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাইকোর্টে আসবেন জানিয়ে কাওছার আহমেদ বলেন, ‘এ সময় আমাদের আন্দোলন কিছু সময়ের জন্য স্থগিত করা হবে কি না, তা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ওই দিন দুটি রাজনৈতিক দলে সমাবেশ থাকলেও তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’